নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মানুষের দুর্ভোগের সময় ত্রাণ নিয়ে কেউ নয়-ছয় করবেন না। তাহলে কিন্তু রক্ষা পাবেন না। নয়-ছয় করলে আপনাকে ধরা পড়তেই হবে। টাকা-পয়সা কিন্তু লুকানো যায় না। দুঃসময়ে কেউ দুর্নীতি করলে তাকে শাস্তি পেতেই হবে, তাকে কিন্তু আমি ছাড়ব না।
মঙ্গলবার (৭ এপ্রিল) ভিডিও কনফারেন্সে তিনি এ কথা বলেন। সকাল ১০টায় গণভবন থেকে এই ভিডিও কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়। করোনায় করণীয় নিয়ে এদিন চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের জেলাসমূহের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে মতবিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবাই সতর্ক থাকবেন। সতর্ক থাকলে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না। করোনাভাইরাসকে প্রতিরোধ করতে হলে সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যে সতর্কবাণী দিয়েছি এই সতর্কতা মেনে চলবেন। তাহলে অনেক জীবন রক্ষা পাবে। এপ্রিল মাসটা নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় আছি। তবে সতর্ক থাকলে আমাদের দুশ্চিন্তা অনেকটা কাটবে।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরের অবস্থার মতো ব্যাপক খাদ্য ঘাটতি দেখা দিতে পারে। তাই আমাদের উৎপাদন বাড়াতে হবে। আমরা উৎপাদন বাড়ালে বিদেশের কাছে হাত বাড়াতে হবে না, এমনকি উদ্বৃত্ত থাকলে আমরা তাদের সাহায্য করতে পারব।
তিনি বলেন, যেকোনো পরিস্থিতি যেন আমরা মোকাবিলা করতে পারি সে জন্য খাদ্য উৎপাদন করতে হবে এবং প্রস্তুত থাকতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা নামক একটি ভাইরাস শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বে একটি প্রলয় সৃষ্টি করেছে। এটি দুর্ভাগ্যজনক। করোনাভাইরাসের কারণে আজ সারাবিশ্ব স্থবির। এর প্রভাব বাংলাদেশে পড়েছে এবং এটা খুব স্বাভাবিক। আমরা শুরু থেকেই চেষ্টা করেছি এর প্রভাবে মানুষ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। সে জন্য আমাদের সতর্ক থাকতে হবে যেন এর প্রভাবে আমাদের দেশের মানুষের ক্ষতি কম হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে সামাজিক এবং অর্থনৈতিকভাবে একটা স্থবিরতা এসে গেছে। যার ফলে আমরা অর্থনৈতিক যে গতিশীলতা সৃষ্টি করেছিলাম সেটাও থেমে গেছে এটা শুধু আমাদের দেশে না সারাবিশ্বে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর যে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল তারপর কোটি কোটি লোক মারা যায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরও আমরা একই অবস্থা। এটা নিয়ন্ত্রণ করতে হলে সবাইকে কাজ করতে হবে এবং সবাইকে আমি কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবা দিতে গিয়ে যদি কোনো চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হোন তাহলে পদবী অনুযায়ী তাদের ৫ থেকে ১০ লাখ টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। আর কেউ মারা গেলে তার ৫ গুণ অর্থ সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া কথাও জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা এই সময়ে দায়িত্বপালন করছেন না তারা ভবিষ্যতে ডাক্তারি করতে পারবে কিনা সেটাও দেখা হবে।
Leave a Reply