আজ ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

আলোচিত তাসফিয়া হত্যা মামলার প্রধান আসামীর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি-দৈনিক বাংলার নিউজ

নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নে তাসফিয়া আক্তার জান্নাত (৪) হত্যা মামলার প্রধান আসামী মো. রিমন ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার রাতে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলাম তার জবানবন্দী রেকর্ড করেন।

মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মো. সবজেল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সকালে রিমনসহ ৫ আসামিকে আদালতে আনা হয়। তাদের মধ্যে সোহেল উদ্দিন, সুজন, নাইমুল ইসলাম এবং আকবর হোসেনের ৭দিন করে রিমান্ড চাওয়া হয়। পরে আদালত রিমান্ড আবেদনের শুনানি শেষে দুপুরে প্রত্যেকে ৫দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এছাড়া প্রধান আসামি রিমন স্বীকারোক্তি দিতে রাজি হওয়ায় তার জবানবন্দি রেকর্ডের আবেদন করা হয়।

তিনি আরও বলেন, বিকালে রিমনকে বিচারকের খাস কামরায় ডাকা হয়। সেখানে তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। পরে, তাকে রাত সাড়ে ৮ টায় খাস কামরা থেকে বের করা হয় এবং জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়।

জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম পিপিএম বলেন, এজাহারনামীয় ১নং আসামী মামুন উদ্দিন ওরফে রিমন (২৫), বিজ্ঞ আদালতে নিজের দোষ স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। জবানবন্দিতে বলে যে, এই মামলার আসামী বাদশা তাহার কাকা হয়। ভিকটিম পক্ষের লোকজনের সাথে বিবাদী পক্ষের মাটি কাটা নিয়ে বিরোধ চলে। ঘটনার দিন মহিনদের বাড়ীর সামনে ১০/১২ জনে ভিকটিম পক্ষের লোকজনকে মারার জন্য জুয়েলের নিকট হতে ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে অস্ত্র ভাড়া নেয়। বাদশা ও মহিনের নির্দেশে সে নিজেই শিশু তাসফিয়া আক্তার জান্নাত ও তার বাবাকে গুলি করে। পরবর্তীতে তাসফিয়া আক্তার জান্নাত মারা যায়।

উল্লেখ্য, গত ১৩ এপ্রিল (বুধবার) বিকাল ৪টায় তাসফিয়াকে নিয়ে বাড়ির পাশ্ববর্তী মালেকার বাপের দোকান এলাকার আবদুল্লাহ আল মামুনের বন্ধু ষ্টোরে যান প্রবাসী মাওলানা আবু জাহের। ওই দোকানে গিয়ে তাসফিয়ার জন্য চকলেট, জুস ও চিপস নিয়ে দোকান থেকে বের হওয়ার সময় রিমন, মহিন, আকবর এবং নাঈমের নেতৃত্বে ১৫/২০ জনের একদল সন্ত্রাসী আবদুল্লাহ আল মামুনের দোকানে এসে মাটি কাটা নিয়ে বিরোধের জের ধরে তাঁর উপর হামলা চালায়। একপর্যায়ে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়লে পাশে থাকা গ্যাসের সিলিন্ডারে লেগে তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। পরে, তারা দোকান থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় সন্ত্রাসীরা পেছন থেকে তাদের লক্ষ্য করে প্রথমে ইট নিক্ষেপ করলে মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয় তাসফিয়া। পরে তারা বাড়ি যাওয়ার সময় পেছন থেকে বেশ কয়েক রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছুড়ে সন্ত্রাসীরা। এতে তাসফিয়া ও মাওলানা আবু জাহের গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।

পরে গুলিবিদ্ধ তাসফিয়া ও মাওলানা আবু জাহেরকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয়রা। পরে সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকায় নেওয়ার পথে কুমিল্লায় পৌঁছলে মারা যায় তাসফিয়া। মাটি কাটার জের ধরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেও মাটি কাটা নিয়ে বিরোধের সঙ্গে কোনোভাবেই সম্পৃক্ততা ছিল না মাওলনা আবু জাহের বা তার মেয়ে তাসফিয়া। তবে মাটি কাটা নিয়ে বৈঠকে ছিল এমন অভিযোগে সন্ত্রাসীদের টার্গেট হয় মাওলানা আবু জাহের। আর সেই টার্গেটের শিকার হয়ে প্রাণ হারায় তাসফিয়া এবং চোখে ও মাথায় গুলিবিদ্ধ হন বাবা মাওলানা আবু জাহের।

এ ঘটনায় পরদিন বৃহস্পতিবার দুপুরে তাসফিয়া হত্যার ঘটনায় তার খালু হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে বাদশা ও রিমনসহ ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১০/১২ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় এ পর্যন্ত ৯ জন এজাহারভুক্ত আসামিকে গ্রেফতার করেছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।

এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com