বিশেষ প্রতিনিধিঃ- খন্দকার রাব্বি
বাবা কাজ করেন অন্যের বাড়িতে তাই কোনো রকম দু’বেলা খাবার যোগাতেই হিমসিম অবস্থা। পরিবারের খরচ চালাতেই যেখানে কাহিল সেখানে মেয়ের পড়ালেখার খবর নেওয়ার সুযোগ কোথায় তার। এত অবহেলার পরেও মেয়ে যখন মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে তখন আনন্দে আত্মহারা বাবা। কিন্তু এই আনন্দ আবার বিষাদে পরিণত হয়েছে। কলেজে ভর্তি আর পড়ালেখার খরচ মাথায় নিয়ে এখন হতাশার দিন গুনছে হবিগঞ্জ শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির সুযোগ পাওয়া জয়পুরহাটের হরিপুর গ্রামের স্মৃতি পারভিনের পরিবার।
স্মৃতি পারভিন বলেন, আমার টেবিলে বসে পড়ালেখার সুযোগ হয়নি। শো’বার ঘরের খাটে বসেই আমি পড়াশোনা করেছি। আর এভাবেই সবধরনের পড়াশোনা করতে হয়েছে।
স্মৃতি আরও বলেন, শিক্ষা জীবনে কোনো সমস্যার কথায় আমি তুলে ধরেনি বাবা মার কাছে। আমি বাসায় বসে শুধু অনলাইনে কোচিং করেই ভর্তির সুযোগ পেয়েছি হবিগঞ্জ শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজে। জানি না সেই মেডিক্যালে ভর্তি হতে পারব কি না? বাবা-মা আমাকে পড়াশোনা করাতে পারবে কি না সেটি নিয়ে শংকায় আছি।
স্মৃতির বাবা-মা বলেন, আমার নিজের জমি না থাকায় অন্যের জমিতে দিনমজুরের কাজ করি। সেই টাকা দিয়ে আমি সংসার চালাই পাশাপাশি মেয়েকে পড়াশোনা করাতাম। মেয়ের ডাক্তারি পড়ার সুযোগে খুশি হলেও বিচলিত পড়া লেখার খরচ নিয়ে তারা। মেয়েকে ডাক্তার বানানোর জন্য তাই বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করছেন স্মৃতির বাবা-মা।
স্মৃতির স্কুল শিক্ষক শাহআলম ও প্রতিবেশী কয়েকজন বলেন, স্মৃতির অদম্য মেধার প্রতি শ্রদ্ধা জানায় আমরা সবাই, তারা বলছেন মেয়েটি আমাদের এলাকার গর্ব, অর্থের অভাবে এমন মেধা যেন ঝড়ে না পড়ে সেজন্য তাকে সহযোগিতা করা দরকার বলে মনে করছেন সবাই।
ভাদসা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সরোয়ার হোসেন স্বাধীন বলেন, স্মৃতির পড়া লেখা চালিয়ে যাওয়ার জন্য বিত্তবান ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের এগিয়ে আসা উচিৎ।
অভাবের সংসারে পড়ালেখা করা স্মৃতি পারভীন এসএসসি ও এইচএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছিল। শিক্ষা জীবন শেষে তাই গরিব রোগীদের সেবা করতে চায় মেধাবী এই ছাত্রী।
Leave a Reply