আজ ৩রা বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সুবর্ণচরে পতিতালয়ের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দ্বন্দ্বঃ ধর্ষণের তকমা সাজিয়ে মিথ্যা মামলা-দৈনিক বাংলার নিউজ

 

নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ

নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার ২নং চরবাটা ইউনিয়নের সেলিম বাজার আশ্রায়ণ প্রকল্পে মাদক ও পতিতাবৃত্তির সাথে জড়িতদের শাস্তির দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে আশ্রায়নে বসবাসরত প্রায় ২ শতাধিক সচেতন নারী পুরুষ,শিশু,বৃদ্ধা।

গতকাল ৭ নভেম্বর (সোমবার) বিকালে সুবর্ণচর উপজেলার ২ নং চরবাটা ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড চরমজিদ এলাকায় আশ্রায়ণ প্রকল্পের সামনে বটতলী তারা মার্কেটে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নেয় আশ্রয়ন প্রকল্পের বসবাসকারী সচেতন তরুন,তরুণী, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অধ্যায়রত স্কুল,কলেজ,মাদ্রাসার ছাত্রছাত্রী।

মানববন্ধনে ১ নং দিঘীর সভাপতি হোসেন বলেন, সেলিম বাজার আশ্রায়নে চলছে পতিতাবৃত্তি, মাদক ব্যাবসা সহ নানা অনৈতিক কাজ। হাতিয়া উপজেলার চানন্দী ইউনিয়নের নলেরচর গ্রামের বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেনের পুত্র বেলাল হোসেন (৪৫) আশ্রায়ণে দীর্ঘদিন ধরে অজ্ঞাত নারীদের এনে অনৈতিক কাজ করিয়ে অর্থ আয় করছেই। সেই সাথে ইয়াবা, গাঁজাসহ নানান ধরনের মাদক এনে এখানে রমরমা বাণিজ্য করেই যাচ্ছে। তার বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলে তাদেরকে গুম,খুন ও হামলা মামলার ভয় দেখান। দরিদ্র শান্ত,কৃষক,জনতার আশ্রায়ণ প্রকল্পে পাখির মতো উড়ে এসে সে রাজা হতে চাই। অবৈধ ব্যবসার প্রতিবাদ করা,যুব সমাজ ধ্বংস করছে একটি চক্র আশ্রায়ণে। তার হুকুম মান্য না করলে চলে নির্যাতন,হামলা,মিথ্যা মামলা।

আশ্রায়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা ইয়াসমিন নামের এক নারীকে ২ বছর আগে বিয়ে করে, গত ৭ মাস আগে ইয়াসমিনকে তালাক দেয় বেলাল। তালাক দেয়ার পরেও ইয়াসমিনের ঘরে প্রতিনিয়ত যাতায়াত করে বেলাল হোসেন। গতকাল ৬ নভেম্বর বেলাল অপরিচিত দুজন নারীকে নিয়ে ইয়াসমিনের ঘরে তোলে বিষয়টি টের পেয়ে লোকজন নিয়ে হোসেন ইয়াসমিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ইয়াসমিন ক্ষিপ্ত হয়ে হোসেনকে রড দিয়ে মারধর শুরু করে দেয়।

মানববন্ধনে বেলালের সাবেক স্ত্রী নুর জাহান বলেন, বেলাল ২ বছর আগে আমাকে ছেড়ে চলে আসে এবং আশ্রায়নের ইয়াসমিনকে বিয়ে করে। গত ৭ মাস পূর্বে ইয়াসমিন বেলালকে তালাক দিয়েছে মর্মে একটি তালাক নামা দেখিয়ে ইয়াসমিনকে বিদায় করে দিতে হোসেনের মাধ্যমে বেলালকে ৮০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। সে টাকা পেয়ে বেলাল ইয়াসমিনকে নিয়ে চট্রগ্রাম চলে যায়। পূনরায় গত ৩ দিন পূর্বে বেলাল ইয়াসমিনকে নিয়ে আশ্রায়ণে আসলে নুর জাহান জানতে পেরে পাওনা টাকা নিতে আসেন। গতকাল হোসেন কে নিয়ে পাওনা টাকা চাইতে গেলে ইয়াসমিন হোসেনকে মারধর করে। বেলালের এমন অসামাজিক কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ হয়ে আশ্রায়ণের বাসীন্দাগণ রাস্তায় প্রতিবাদ করে।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা আরো বলেন, বেলাল ও হোসেনের সাথে বড় একটি চক্র জড়িত রয়েছে। চট্রগ্রামসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে নারী ও মাদক এনে আশ্রয়ন প্রকল্পে ব্যবসা করে যাচ্ছে। এসব কার্যক্রমের সাথে যারাই জড়িত সকলকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবী জানান আশ্রায়নের বাসিন্দাগণ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক আশ্রায়ণের বাসিন্দারা জানান,পুলিশের কিছু কর্তাবাবু মাসিক মাসোয়ারা নিচ্ছে এ ব্যবসা থেকে। এছাড়াও স্থানীয় যুবলীগের এক নেতার আশ্রয়ে, প্রশ্রয় চক্রটি আরো বেপরোয়া হয়ে পড়েছে।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, আশ্রয়নের বাসিন্দা মোঃ হোসেন, হাশেমের পুত্র সুমন, একই এলাকার বাসিন্দা তাজুল ইসলাম, অভিযুক্ত বেলালের সাবেক স্ত্রী নুর জাহান(৩৮), মেয়ে জান্নাত (১৮)।

অভিযুক্ত বেলাল আরো বলেন, আমি ইয়াসমিনকে তালাক দেয়নি, আমার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ মিথ্যা।গতকাল হোসেন ষড়যন্ত্র করে আমাকে মারধর করে এ বিষয়ে আমি থানায় অভিযোগ করেছি। অভিযুক্ত ইয়াসমিন বলেন, আমার স্বামী বেলালকে তালাক দিয়েছিলাম সত্য পরে আমরা কোর্টের মাধ্যমে পূনরায় মিলমিশ হয়ে গিয়েছি। আমি চট্রগ্রাম গার্মেন্টসে কাজ করি মাঝে মাঝে আশ্রায়ণে এসে থাকি স্বামীর সঙ্গে।

গতকাল হোসেন আমাদেরকে মারধর করে পরে আমরা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমার বিরুদ্ধে তারা মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে। তারা যা বলেছে সব মিথ্যা।

চরজব্বর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জয়নাল আবেদিন বলেন, বেলাল এবং ইয়াসমিন চট্রগ্রাম থাকে কয়েকদিন আগে তারা আশ্রায়নে আসে। গতকাল হোসেনসহ কয়েকজন লোক ইয়াসমিনের ঘরে হামলা ও ভাংচুর করে। ইয়াসমিন বাদী হয়ে চরজব্বর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তদন্ত করে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com