আজ ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

নাচোলে পানের দোকান চালাচ্ছে ছাত্রী রাফিয়া-দৈনিক বাংলার নিউজ

অলিউল হক ডলার নাচোলঃ
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে জীবনযুদ্ধে অসুস্থ্য পিতার পানের দোকানে সহযোগিতা করছে ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী রাফিয়া সুলতানা (১১)। পিতা রফিকুল ইসলাম (৫৮) চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার উজিরপুর ইউনিয়নের মোল্লাটোলা গ্রামের শহিমুদ্দীনের ২য় সন্তান। রফিকুল ইসলাম সর্বনাশা পদ্মার ভাঙনে নিঃস্ব হয়ে নাচোলের মুরাদপুরে ভাড়া যায়গায় বসবাস করতে থাকেন।
রফিকুল ইসলাম পিতার সংসারের ভার কাঁধে নিয়ে নাচোল বাসস্ট্যান্ডে ৬ ভাইকে (ইসলামীয়া হোটেল) হোটেল ব্যবসায় নিয়োজিত করেন। নিজে পান দোকান দিয়ে ৪ মেয়েকে নিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন। এরই মধ্যে স্ট্রোকে অক্রান্ত হন রফিকুল ইসলাম। মেয়েদের সহযোগিতায় কিছুটা সুস্থ্য হন রফিকুল ইসলাম। বাধ্য হয়ে স্কুলের লেখাপড়া শেষে অসুস্থ্য পিতাকে সহযোগিতা করতে নাচোল বাসস্ট্যান্ডে ইসলামী হোটেলের সামনে পান দোকানে দু’বেলা বসতে হচ্ছে ছোট মেয়ে রাফিয়া সুলতানাকে। রফিকুল ইসলামের চার মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ে রাফিজা সুলতানা বিবাহিত। তবুও সে মেধা ও অদম্য মনোবল নিয়ে স্বামী ও পিতার আশ^াসে গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বায়ো টেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ালেখা করছে। মেজো মেয়ে ফাওজিয়া খাতুন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সরকারী কলেজে বিএসসি পড়ছে। সেজো মেয়ে রিজিয়া সুলতানা এ বছর নাচোল খুরশেদ মোল্লা সরকারী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করে নাচোল মহিলা কলেজে এইচএসসিতে ভর্তি হয়েছে। ছোট মেয়ে রাফিয়া সুলতানা এবছর নাচোল খুরশেদমোল্লা সরকারী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেণীতে পড়ালেখা করছে। মেয়েদের লেখাপড়া ও সংসার খরচ চালাতে হিমশিম খেয়ে অসুস্থ্য হয়ে পড়েছেন রফিকুল ইসলাম। তাই বাধ্য হয়ে লেখা-পড়ার পাশাপাশি অসুস্থ্য পিতাকে পানদোকানে নিয়মিত সহযোগিতা করে অসছে ছাত্রী রাফিয়া। জীবন সংগ্রামী কিশোরী রাফিয়া সুলতানা পিতাকে ছেলের অভাব বুঝতে দিতে চায়না। তাই পান দোকানে সহযোগিতা ও মনোবল জুগিয়ে সেও ভাল ফলাফল করে ভাল মানুষ হতে চায়। সরকারী সহযোগিতা পেলে বড় বোনদের মত সেও উচ্চ শিক্ষিত হতে চায়। অসুস্থ্য পিতাকে সহযোগিতা করতে জীবন সংগ্রামে নেমেছে কিশোরী রাফিয়া সুলতানা। অসুস্থ রফিকুল ইসলাম জানান, সম্প্রতি হঠাৎ স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে ছোট মেয়ে রাফিয়া আমাকে ছেলের মত করে পানের দোকানে সহযোগিতা করছে। পান দোকানের আয় দিয়েই এখন আমার সংসার ও চিকিৎসা চলছে।

এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com