ফরিদপুর প্রতিনিধি :
ফরিপুরের আলফাডাঙ্গায় বিরল রোগে আক্রান্ত দুই সহদর এখন চিকিৎসার উদ্দেশ্যে ঢাকায়। আলফাডাঙ্গা সদর ইউনিয়নের শুকুরহাটা গ্রামের চা দোকানি হাবিবুর রহমান ও রাবেয়া বেগম দম্পতির দুই সন্তান আবির হুসাইন নাঈম (১৪) ও শিশু মো. নূর হোসেন (৪) জন্মের পর থেকেই বিরল রোগে আক্রান্ত হয়ে অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে জীবন পার করছে। জন্মের পাঁচ মিনিট পর থেকেই হাত-পা, মাথা, চোখ, মুখসহ সারা শরীরের ত্বক ফেটে ফেটে রক্ত ঝরে। দেখতে মনে হয় আগুনে ঝলসে গেছে। হয় প্রচণ্ড রকম চুলকানি। চুলকাতে চুলকাতে রক্ত বের হতে থাকলে দেখা দেয় প্রবল শ্বাসকষ্ট। অনেক সময় হাত-পা কুঁকড়ে যায়। কিছুতেই সহ্য করতে পারে না গরম, ৩-৪ মিনিট পরপর শরীরে ঢালতে হয় পানি।
বিরল রোগে আক্রান্ত এই দুই শিশুকে ঢাকাসহ ভারতের বিভিন্ন স্থানের অনেক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হলেও এখন পর্যন্ত রোগটিই শনাক্ত করা যায়নি।দেশ-বিদেশে দুই সন্তানের চিকিৎসা করাতে গিয়ে এ পর্যন্ত খরচ হয়েছে প্রায় ১৫ লাখ টাকা। এখন ভিটা ছাড়া কিছুই অবশিষ্ট নেই। অর্থাভাবে শিশু দুইটির চিকিৎসা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। বিভিন্ন গনমাধ্যমে এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশ হলে বিষয়টি ফরিদপুর ১ আসনের সাবেক সংসদ কাজী সিরাজুল ইসলামের নজরে আসে।
১৭জুন শনিবার সকালে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার শুকুরহাটা গ্রামে বিরল রোগে আক্রান্ত দুই ভাইকে দেখতে যান তিনি। এর আগেই গণমাধ্যমে খবরটি প্রচার হলে স্বেচ্ছায় তিনি তাদের চিকিৎসার দায়িত্বভার গ্রহণের আশ্বাস দেন । শনিবার সকালে আক্রান্ত শিশু দুটিকে দেখতে গিয়ে পরিবারের নিটক তাদের শারীরিক কষ্টের কথা শুনে তিনি আবেগে আপ্লূত হয়ে পড়েন। এবং যতদ্রুত সম্ভব তাদের ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা শুরু করতে বলেন। এ সময় তিনি শিশুদুটির পিতা মো. হাবিবুর রহমান এর হাতে প্রাথমিকভাবে ২০ হাজার টাকা তুলে দেন তিনি।
কাজী সিরাজুল ইসলাম জানান “ইতোপূর্বে এমন রোগাক্রান্ত কাউকে আমি দেখিনি। এদের কষ্ট সত্যি অবর্ণনীয়। শুধু তারাই নয় পরিবারের সবাই অবর্ণনীয় দুর্ভোগের শিকার। আমি চাই বিরল রোগে আক্রান্ত দুই ভাইকে প্রথমে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে তাদের চিকিৎসা শুরু করতে। দেশে চিকিৎসা না হলে প্রয়োজনে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারত বা অন্যত্রে পাঠানো হবে।
Leave a Reply