আজ ১লা ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শিবগঞ্জে সুদ কারবারির খপ্পড়ে নিঃস্ব অনেকেই

মোঃ সেতাউর রহমান,চাঁপাইনবাবগঞ্জঃ
চাঁপাইনবাবগঞ্জে শিবগঞ্জ উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের মোহাঃ শহীদুল্লাহ নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে সুদের কারবার ও প্রতারণার মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার একাধিক আভিযোগ উঠছে।

শহিদুল্লাহ শিবগঞ্জ উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের উপর চাকপাড়া গ্রামের মোঃ দাউদ হোসেনের ছেলে।

উক্ত সুদ কারবারী খেটে খাওয়া, অসহায়, দিনমজুর এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের মাঝে চড়া সুদে টাকা দিয়ে দেদারসে সুদ কারবার চালিয়ে আসছে। সুদের উপর টাকা বিনিময়ের সময় গ্রহকের কাছ থেকে ফাঁকা ব্যাংক চেক ও নন জুডিশিয়াল ষ্টাম্পে ফাঁকা স্বাক্ষর করে নেয়। যাতে করে সে পরবর্তীতে মোটা টাকার দাবি করতে পারে এমন কুমতলবে। এমন ফাঁদে পড়ে নিঃশ্ব হয়েছে খেটে খাওয়া অসহায় ও দিনমজুর এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের অনেকেই। সুদ সহ টাকা পরিশোধ করার পরও আবার কেউ বা মামলার শিকার হয়ে সাজা প্রাপ্ত আসামী হয়েছে। কেউ বা আবার তাঁর ফাঁদে পড়ে হয়েছে ঘরছাড়া।
বিষয়টি নিয়ে সরজমিনে তথ্য অনুসন্ধানে গেলে মোহাঃ শহিদুল্লাহ দীর্ঘ দিন ধরে সুদ কারবারের সাথে জড়িত থাকার তথ্য বেরিয়ে আসে।

ভুক্তভোগী মোঃ আব্দুর রশিদ জানান, শহিদুল্লার নিকট হতে দুই মাসের জন্য ২ লক্ষ টাকা সুদের উপর গ্রহন করি এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে লাভসহ ২ লক্ষ ২০ হাজার টাকা পরিশোধ করি। তারপর দুটি ফাঁকা চেক ও নন জুডিশিয়াল ষ্ট্যাম্প চাইলে আজ দিব কাল বলিয়া কালক্ষেপন করে দিন পার করতে থাকে। পরে ১০/০৭/২০২৩ইং তারিখ আমার নামে ৯ লাক্ষ ৭০ হাজার টাকা কোর্ট থেকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠায়। বিষয়টি সম্পর্কে আমি জানতে পেরে স্থাণীয়ভাবে আপোষ মিমাংসার উদ্যোগ নেওয়া হয়। ফলে ১৮/০৭/২০২৩ইং তারিখ শালিশের মাধ্যমে ৪০ হাজার টাকা আপোষ মিমাংসা হয়।কিন্তু সুদ কারবারি আমাকে ফাঁকা স্বাক্ষর যুক্ত চেক দুটি ও নন জুডিশিয়াল ষ্ট্যাম্প ফেরৎ দেয়নি। এবিষয়ে সালিশি বোর্ডের সভাপতি মোঃ আবুল কালাম বলেন, অপর দিকে শহিদুল্লাহ আম ব্যবসায়ী পার্টনার মোঃ মোজাম্মেল হক (মুন্টু) জানান তার সাথে প্রতারণা করে গত ২০১৮ সালের দিকে স্বাক্ষর জ্বাল করে জনতা ব্যাংক শিবগঞ্জ শাখা হতে ১ লাখ টাকা উত্তোলন করে নেয়।পরে জানাজানি হলে আপোষ মিমাংসার মাধ্যমে টাকা ফেরৎ দিতেও অনেক গড়িমসি করে শহিদুল্লাহ।

এখানেই শেষ নয় মোহাঃ শহিদুল্লাহ সুদের টাকার খপ্পড়ে পড়ে শিবগঞ্জ উপজেলার শাহাবজপুর ইউনিয়নের পারদিলালপুর গ্রামের মৃত হেসামুদ্দিন বিশ্বাস ও মৃত আয়েশা বেগমের ছেলে মোঃ লালন ইসমাইল। তিনি টাকা পরিশোধ করলেও উঠানো হয়নি মামলা। ফলে গত ১৩/০৩/২০২২ ইং তারিখে তার পাঁচ মাসের সাজার আদেশ দেন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত। মোঃ লালন ইসমাইলের স্ত্রী বলেন শহিদুল্লাহর খপ্পড়ে পড়ে আজ আমার স্বামী ঋণের দায়ে সাজা প্রাপ্ত আসামি। তিনি আরও বলেন আমার স্বামী কোথায় আছে কিভাবে আছে আমরা তার খোঁজ পাচ্ছিনা।তার কারণে আমরা আজ মানবেতর জীবনযাপন করছি।

উপরোক্ত বিষয়গুলো নিয়ে মোহাঃ শহিদুল্লাহর নিকট ঘটনার সত্যতা জানতে তার সরাসরি সাক্ষাৎ পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন আমার সাথে দেখা করে কি করবেন, দেখা হবেনা আমার সাথে বলে ফোন কেটে দেয়।

পরবর্তীতে মোহাঃ শহিদুল্লাহ ঘটনার সত্যতা জানতে ছুটে যাওয়া হয় সোনামসজিদের ইমাম মোঃ হিজবুল্লাহ নিকট। তিনি বলেন মোহাঃ শহিদুল্লাহ তার ভাই।তিনি আরও বলেন গত ১৮/০৭/২০২৩ইং তারিখে শিবগঞ্জ থানায় যে শালিশ হয় সেখানে মোহাঃ শহিদুল্লাহ তাকে ডাকে কিন্তু সুদের টাকার কারবার বলে তিনি সেই শালিশে যান নি।

এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com