আজ ২৫শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিবগঞ্জে মাদ্রাসার এক শিক্ষিকা অনুপস্থিত হয়েও হাজিরা খাতায় শতভাগ সই

 

আহসান হাবীব,(চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধি:

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের এক মাদ্রাসার শিক্ষিকা অনুপস্থিত থেকেও শিক্ষক হাজিরা খাতায় শতভাগ হাজিরা সই করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। জানা গেছে, শিবগঞ্জ উপজেলার মোবারকপুর ইউনিয়নের গোয়াবাড়ি চাঁদপুর দাখিল মাদ্রাসার এবতেদায়ী শিক্ষিকা মোসা. ফিরোজা খাতুন এই ঘটনাটি ঘটিয়েছেন। ওই শিক্ষিকা থাকেন তাঁর রাজশাহীর বাড়িতে। আর সপ্তাহে ২দিন মাদ্রাসায় এসে পুরো সপ্তাহের সই করেন তিনি বলেও অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, এই মাদ্রাসার কমিটির সভাপতি মো. মনিরুল ইসলাম স্বামী হওয়ায় তাঁর ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন তিনি। বিধায়, তিনি মাদ্রাসায় উপস্থিত হোন না।
এছাড়া মাদ্রাসার সুপার মো. রইসুদ্দিন একাধিকার মৌখিকের সাথে সাথে লিখিক শতর্ককরণ নোটিশ ও হাজিরা খাতায় সই করতে নিষেধ করার পরও তিনি হাজিরা খাতায় সই করেন এবং তাঁর স্বামী কমিটির সভাপতিকে সুপারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন বলেও জানা গেছে। গত কয়েকদিন থেকে অভিযুক্ত শিক্ষিকা মোসা. ফিরোজা খাতুনকে মাদ্রাসায় উপস্থিত হতে দেখতে পাননি এই প্রতিবেদক।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ১৯৯৬ সালে মাদ্রাসাটি স্থাপিত হলে এবতেদায়ী শিক্ষিকা মোসা. ফিরোজা খাতুন ১৯৯৮ সালে নিয়োগ পান। নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে তিনি ঠিকমত মাদ্রাসায় ক্লাসে আসতেন না। আর ২০২২ সালে বর্তমান সরকার মাদ্রাসাটি এমপিওভুক্ত করলে তিনি মাঝে মধ্যে মাদ্রাসায় আসেন এবং শিক্ষক হাজিরা খাতায় পুরো মাসের সই এক সাথে করেন।

এদিকে, মাদ্রাসার চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, ফিরোজা ম্যাম মাদ্রাসায় ঠিকমত আসেন না। তিনি কোন সপ্তাহে একদিন আবার কোন সপ্তাহে দু’দিন আসেন। আমাদের পড়াশোনা ঠিকমত হচ্ছে না ফিরোজা ম্যামের জন্য। তাঁর ক্লাস থেকে আমরা বঞ্চিত।
এছাড়া না প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, একজন শিক্ষিকা মাদ্রাসায় উপস্থিত না হয়ে কিভাবে বেতন-ভাতা পান? শুনেছি, তিনি তিনি কোন সপ্তাহে একদিন আবার কোন সপ্তাহে দুইদিন আসেন। এটাও সত্য না হতে পারে। মাদ্রাসার কমিটির সভাপতি ওই শিক্ষিকার স্বামী বলে যা ইচ্ছে তাই করবেন? আমরা এই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর আবেদন করছি।
এব্যাপারে এবতেদায়ী শিক্ষিকা মোসা. ফিরোজা খাতুনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
অন্যদিকে, গোয়াবাড়ি চাঁদপুর দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো. রইসুদ্দিন বলেন, আমি একাধিকার মৌখিকের সাথে সাথে লিখিক শতর্ককরণ নোটিশ ও হাজিরা খাতায় সই করতে নিষেধ করার পরও তিনি হাজিরা খাতায় সই করেন এবং তাঁর স¦ামী কমিটির সভাপতিকে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। পরবর্তীতে সভাপতি আমাকে শিক্ষিকা ফিরোজাকে হাজিরা খাতায় সই করতে দিতে বলেন। আমি বাধ্য হয়ে তাঁকে সই করতে দেই।
এব্যাপারে মাদ্রাসার সভাপতি মো. মনিরুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে তাঁর ব্যবহৃত ০১৭১৮-১৯৯০০৩ নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এব্যাপারে শিবগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মীর মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি খোঁজ নিয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।

এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com