এস এম আব্দুল্লাহ,স্টাফ রিপোর্টার:
যশোরর শার্শার স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাগআঁচড়া ডাক্তার আফিল উদ্দীন ডিগ্রী কলেজে ঘোষিত অর্ধ বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফলে ৮১ ভাগ শিক্ষার্থী ফেল করায় প্রতিষ্ঠানটিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও সুধিজনদের মধ্যে উদ্বেগ ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে উঠেছে সমালোচনার ঝড়।
কলেজ সূত্রে জানাযায়, এবছর এ অর্ধ বার্ষিকী পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী ছিল ২৮০ জন এর মধ্যে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে পাশ করেছে মাত্র ৩ জন, মানবিকে ৪১ জন ও বিজ্ঞান বিভাগে ৯ জন। মোট পাশ করেছে ৫৩ জন।পাশের হার মাত্র ১৮ ভাগ ও অকৃতকার্যের হার ৮২ ভাগ।
তুলনামূলকভাবে মানবিক বিভাগ থেকে ৪১ জন ছাত্র-ছাত্রী কৃতকার্য হলেও শোচনীয় ফলাফল হয়েছে বিজ্ঞান ও ব্যবসায় বিভাগের। প্রশ্ন দেখা দিয়েছে কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে একটি আধুনিক বিজ্ঞানাগার ও পর্যাপ্ত মেধাবী শিক্ষকসহ সমস্ত সুযোগ সুবিধা থাকার পরও কেন ফল বিপর্যয়?
ফলাফলের কপি কলেজের অফিসিয়াল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক পেইজে আপলোড করা হলে কাঙ্খিত ফলাফল অর্জিত না হওয়ায় সমালোচনার ঝড় উঠে।
মমিনুজ্জামন,সাইফুল,ওলিউর রহমান সহ অনেকেই তাদের ফেইসবুকের টাইমলাইনে রেজাল্ট সিটের ছবি পোষ্ট করে লিখেছেন: কলেজটির রেজাল্ট দিন দিন গোল্লায় যাচ্ছে। বেতনের স্কেল বাড়লো শিক্ষার মান কমলো। রেজাল্টের বেহাল দশার দায় এড়াতে পারবে না কোন শিক্ষক।
স্থানীয় অনেকেই নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, রেজাল্ট বিপর্যের অন্যতম কারণ শিক্ষকদের ক্লাস ফাঁকি দেওয়া ও খেয়াল খুশী মতো প্রতিষ্ঠানে আশা যাওয়া এবং তারা রাজনীতির সাথে জড়িত থাকা।পতিত আওয়ামিলীগ সরকারের আমলে অনেক শিক্ষক অতপ্রত ভাবে আওয়ামীলীগের রাজনীতি করতো ক্লাস ফাঁকি দিয়ে।অনেক শিক্ষক জেলা শহর যশোর থাকেন। যশোর সাতক্ষীরা রোডে চলালরত যাত্রীবাহী বাস হলো তাদের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম। রোডে চলালরত লোকাল বাসের সাথে তাল মিলিয়েই তারা কলেজে আসা যাওয়া করেন। কিন্তু গণকর্মচারী শৃঙ্খলা (নিয়মিত উপস্থিতি) অধ্যাদেশ ১৯৮২ এবং সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ১৯৮৫ এবং সরকারি কর্মচারী (বিশেষ বিধান) অধ্যাদেশ ১৯৭৯ অনুযায়ি দেশের সব সরকারী আধা সরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কর্মচারীর প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের প্রতিদিন কর্মস্থলে উপস্থিত থাকা বাধ্যতামূলক।
অভিভাবকরা জানিয়েছেন, আমরা আর ফলাফল বিপর্যয় দেখতে চাইনা। অতি শীগ্রই এ সমস্যার সমাধান চাই। আমরা আর সমালোচনার পাত্র হতে চাইনা। কলেজ কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে নতুন করে চিন্তা করতে হবে। শ্রদ্ধেয় শিক্ষকদের একসাথে এগিয়ে আসতে হবে। শিক্ষকরা যদি নিজেরাই লজ্জিত না হয় তাহলে আমরাই কেন লজ্জিত হবো?
ডাক্তার আফিল উদ্দীন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম মুঠোফোনে জানান,সরকারের পট পরিবর্তনের পর কলেজে অনেক কিছু ঘটে গেছে যেটা তিনি বলতে চাননা। ফল বিপর্যয়ের জন্য তিনি নিজের দায় এড়িয়ে শিক্ষার্থীদের দায়ী করে জানান তারা ঠিক মতো কলেজে আসে না।তবে তিনি ভালো ফলাফলের জন্য পদক্ষেপ গ্রহন করবেন বলে জানান।
এ বিষয়ে জানতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হাফিজুর রহমানকে কল দিলে তিনি জানান তিনি শার্শা থেকে বদলী হয়ে গেছেন।
শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) ডাক্তার নাজিব হাসান জানান,বিষয়টি তিনি সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানলেন।অবশ্যই বিষয়টি নিয়ে তিনি ওই কলেজের অধ্যক্ষের সাথে কথা বলবেন।এ সময় তিনি ম্যানেজিং কমিটির সাথে কথা বলার জন্য ও পরামর্শ দেন।
Leave a Reply