আজ ১৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১লা ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

অর্থ পাইয়ে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে একটি চক্র প্রতারণার মাধ্যমে গ্রাহকের কাছ থেকে চার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানা গেছে।

ইউরোপীয়ন ইউনিয়নের সহায়তার অর্থ পাইয়ে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে একটি চক্র প্রতারণার মাধ্যমে গ্রাহকের কাছ থেকে চার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানা গেছে।

মো. আল আমিন খানঃ

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা সরাসরি প্রতারক চক্রের সঙ্গে থেকে প্রতারণা করেছেন। আর সংঘবদ্ধ এ প্রতারক চক্র নেপথ্যে থেকে মদদ দিয়েছেন প্রশাসন ও বাংলাদেশ পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। প্রশাসন ক্যাডার, পুলিশ ও ব্যাংক কর্মকর্তা মিলেমিশে প্রতারণা এবং উল্টো তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগিরা।
শনিবার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রেসক্লাবের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রতারকরা নিজেদের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, ইউরোপীয় ইউনিয়নের দাতা সংস্থার প্রতিনিধি হিসেবে পরিচয় দিয়ে সখ্যতা গড়ে তোলেন। এরপর কৌশলে অর্থ সহায়তা দেয়ার নামে ৪ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রটি। এ ঘটনায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ চীফ জুডিসিয়াল ম্যজিস্ট্রেট আদালতে প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে চারটি (সিআর-৬১৫/২১, ১৫/২২, ৬২/২২ ও জিআর ১১৮/২১) মামলা হয়েছে। মামলায় অভিযুক্ত প্রতারকরা হলেনÑ চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার রেজাউল ইসলাম রেজা, একই এলাকার বাসিন্দা ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, রেজার বন্ধু কাবির, এ চক্রের নারী সদস্য বিউটি ও জেসি। এছাড়াও বিউটির বাবা আনারুল ও মা সেমালি বেগম এ মামলার আসামি।
ভুক্তভোগিরা আরও জানান, এ চক্রের প্রধান আসামী রেজাউল ইসলাম রেজার আপন ভাই মনিরুল ইসলাম পুলিশের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। যিনি রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি হিসেবে কর্মরত আছেন। তার প্রভাবের কারণে তারা ন্যায় বিচার পাওয়া নিয়ে সন্দিহান। পুলিশ কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলামের প্রভাবের কারণে সিআইডির এসআই একেএম ফজলুর রহমান প্রতারক চক্রের অন্যতম আসামি রেজাউল ইসলাম, মিজানুর রহমান, মো. কাবির ও জেসিকে বাদ দিয়ে আদালতে মনগড়া মিথ্যা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। এজাহার নামীয় আসামিদের জড়িত থাকার বিষয়ে যথেষ্ট প্রমাণাদি সংগ্রহ করে তদন্ত কর্মকর্তাকে দেয়া হলেও অজ্ঞাত কারণে তাদের বাদ দিয়ে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছেন তিনি। এই তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে নারাজি দাখিল করলে শুনানী শেষে উচ্চতর তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুারো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। সেখানেও প্রভাব খাটিয়ে তদন্ত প্রভাবিত করার চেষ্টা করবে আসামি রেজাউল ইসলাম রেজার ভাই আরএমপির কাশিয়াডাঙ্গা জোনের ডিসি মো. মুনিরুল ইসলাম।
ভূক্তভোগিরা বলছেন, এ মামলার আরেক আসামি ইসলামি ব্যাংক কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান। তার স্ত্রী শরিফুন নেশা কনা প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। এ মামলার অন্য আসামি জেসি শরিফুন নেশা কনার বান্ধবি বলে আমরা জানতে পেরেছি। প্রতারণার মাধ্যমে এলাকার সহজ সরল মানুষের অর্থ হাতিয়ে এবার আদালতে দায়ের করা মামলাও বিভিন্নভাবে প্রভাবিক করার চেষ্টা করছেন প্রতারক সিন্ডিকেট। এ অবস্থায় মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার পাওয়া নিয়ে আমরা যথেষ্ট সন্দিহান। সরল বিশ্বাসে প্রতারকদের খপ্পরে পড়ে আমরা এখন স্বর্বশান্ত এবং মানসিকভাবেও বিপর্যস্ত। এই পরিস্থিতিতে আমারা সুষ্ঠু বিচার প্রত্যাশী।

এছাড়াও তাদের (ভুক্তভোগি) বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে সাজানো মিথ্যে মামলা করা হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ আদালতে দায়ের করা সিআর-৬১৫/২১ নম্বর মামলার বাদী মো. মাসুম, সিআর-১৫/২২ নম্বর মামলার বাদী রুবেল আলী, সিআর-৬২/২২ নম্বর মামলার বাদী মো. কালাম, জিআর ১১৮/২১ নম্বর মামলার বাদী দুরুল, প্রতারণার দুই মামলার স্বাক্ষী দুখু মিয়া ও তার পিতা ৭০ বছর বয়সী বৃদ্ধ শফিকুল ইসলামকে। এর আগেও চাঁপাইনবাবগঞ্জ আদলতেও তাদের মিথ্যা মামলা দায়ের করে তারা। তবে মামলাটি খারিজ করে দেয় আদালত। প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগিদের দায়ের করা মামলার সুষ্ঠু বিচার ও তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সাজানো মিথ্যা মামলা থেকে অব্যহতির জোর দাবি জানান তারা।

এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ