এস.এম আকাশ, ফরিদপুর অফিস:
ফরিদপুরে জোরপূর্বক অসহায়দের জমি দখলকারী, সিদ্দিকুর রহমান ও (মহরী) চুন্নু গংদের হাত থেকে হারানো জমি উদ্ধারসহ ভূমিদস্যু সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে ভূমিদস্যুদের হাতে জমি দখল হওয়া ভুক্তভোগী অসহায় পরিবারবৃন্দ।
রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারী) বেলা ১২ টার দিকে ফরিদপুরের সিএন্ডবি ঘাট বাজারে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে সিদ্দিক বাহিনী অবৈধভাবে দীর্ঘ দিন যাবত পেশী শক্তির মাধ্যমে চাপ প্রয়োগ করে, জীবন নাশের হুমকি দিয়ে, জোর পূর্বক আমাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে অবৈধ ভাবে আমাদের জায়গা জমি দখল করে আছে।
আমাদের দুঃখ দুর্দশা নির্যাতন নিরাশনের জন্য আমরা নির্যাতিত ভূমির মালিকরা আজ রাস্তায় এসে দারিয়েছি।
আমাদের জোর পূর্বক দখল হওয়া জমি প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ফেরত পেতে পারি ও জীবনের নিরাপত্তা পেতে পারি এই ব্যাপারে প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ কামনা করছি।
এসময় দক্ষিণ চরমাধবদিয়া (নৈমদ্দিন বিশ্বাসের ডাঙ্গি) গ্রামের মোঃ লুৎফর রহমান নান্নু খাঁ বলেন, গুহলক্ষীপুর মহল্লার মৃত আলাউদ্দীন শেখের ছেলে সিদ্দিকুর রহমান দক্ষিণ চরমাধবদিয়ার তালতলা এলাকায় ইট ভাটা করার জন্য আমার ২৩ শতাংশ জমি জোর করে দখল করে নিয়েছেন। এর প্রতিবাদ করায় আমার নামে চাঁদাবাজি, অর্থ আত্মসাৎ ও মারামারির অভিযোগে ১৪টি মিথ্যা মামলা করেছেন সিদ্দিকুর রহমান।
মানববন্ধনে শেখ সালাম (৫৫) নামে এক ব্যক্তি জানান, সিএন্ডবি ঘাটে তাদের জমি দখল করে অবৈধ দোকান ঘর তুলে এবং পাথর বালি ফেলে প্রায় দশ শতাংশ জমি দখল করে রেখেছে সিদ্দিকুর রহমান ।
মাজেদা বেগম (৩৫) নামে একজন বিধবা বলেন, তাদের ২২ শতাংশ জমির মধ্যে দশ শতাংশ জমি তার স্বামী বিক্রি করে যান। কিন্তু বাকি ১২ শতাংশ জমিও দখল করে নিয়েছে। টাকাও দেয়না, জমিও ফেরত দেয়না তারা।
নইমুদ্দি বিশ্বাসের ডাঙ্গী গ্রামের একেবারেই হতদরিদ্র কৃষক হাসান পরামানিক (৭৫) বলেন, তার বাড়ির পাশে গাছপালা কেটে লাইন ধরে কেটে ফেলে রাস্তা করে জমি দখল করেছে।
সোরাব ফকির (৬৫) বলেন, তার দুই ভাই কুড়ি শতাংশ জমি খেতেন। সিদ্দিক তাদের ঘরবাড়ি ভেঙ্গেচুরে দখল করে নিয়েছে।
রাশেদা বেগম (৫৫) নামে একজন নারী বলেন, আমরা মামলা করলেও বিচার পাইনা। ভূমি দস্যুরা বারবার ফসকে যায়। কেনো? আমি প্রধানমন্ত্রী ও এমপি সহ সকলের কাছে এই বিষয়টি জানতে চাই।
তালতলার নুরুল ইসলাম বলেন, অটোভাটা করার জন্য তার চার পাঁচ বিঘা জমি দখল করে নিয়েছে। এখন সেখানে গেলে তাদের হুমকি ধামকি দেয়া হয়।
জানা গেছে, অভিযুক্ত সিদ্দিকুর রহমান ফরিদপুর চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি ছিলেন। তিনি ফরিদপুরের আলোচিত ২ হাজার কোটি টাকা মানি লন্ডারিং মামলার আসামি। গত ৯ আগস্ট ফরিদপুরের কোতোয়ালি থানায় চাঁদাবাজি ও নীতি বহির্ভূতভাবে ১০০ কোটি ৫২ লাখ ৭৬ হাজার টাকা উপার্জন করার অপরাধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ দমন আইন ২০১২ (সংশোধনী/২০১৫) -এর ৪(২) ধারায় একটি মামলা দায়ের করে সিআইডি। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফরিদপুরের পুলিশ পরিদর্শক নাসির উদ্দিন বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
এছাড়া জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ উপার্জনের অভিযোগে গত ১ জানুয়ারি ফরিদপুরের দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক রেজাউল করিম বাদী হয়ে মো. সিদ্দিকুর রহমান (৪৫) ও তার স্ত্রী মিসেস মুসরিন আক্তারের (৪৫) নামে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন।
Leave a Reply